একটা ছবির অনেক ক্ষমতা আছে। কিছু না বলে একটা ছবি দিয়ে অনেক সত্যিকে তুলে ধরা যায়। আজকের দুনিয়ায় মিডিয়া থেকে শুরু করে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি, এমনকি ব্যক্তিগত জীবনে অর্থাত্ বিয়ে, জন্মদিন ইত্যাদি উত্সব-অনুষ্ঠানেও ছবি আমাদের জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুতরাং ফটোগ্রাফার বা আলোকচিত্রীর ক্যারিয়ারটা ভবিষ্যতে যে বেশ মজবুত হচ্ছে সেটা বুঝাই যাচ্ছে। ফটোগ্রাফার হলেই হলো না, ভালো ফটোগ্রাফার হতে হবে। কারণ এখন বাজারে দামি ক্যামেরা এবং ক্যামেরার পিছনের লোকেরও অভাব নেই। সকলেরই বগলে একটা করে ক্যামেরা গোঁজা থাকে। তাই ভালো ফটোগ্রাফি শিখে যদি বাজারে নামা যায় তা হলে ভালো ফটোগ্রাফারের পদ কিন্তু একেবারে পাকা। ফটোগ্রাফি শিখে পার্মানেন্ট কোনো চাকরি না পেলেও ক্ষতি নেই। নিজেই বাড়িতে পোর্টফোলিও বানিয়ে বা ফ্রিল্যান্সিং করে রোজগার করা যায়।
কতরকম ক্যারিয়ার:
অনেকরকম ফটোগ্রাফার কাজ করে আমাদের আশপাশে। প্রত্যেকের কাজের ক্ষেত্র আলাদা। যেমন ফ্যাশন ফটোগ্রাফাররা ফ্যাশন শুট করে, ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফাররা জীবজন্তুর ছবি তুলে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফটোগ্রাফাররা মেশিনের ছবি তুলে, আবার ফরেনসিক ফটোগ্রাফারদের কাজ বিভিন্ন অ্যাসপেক্ট থেকে কোনো ক্রাইমের ছবি তোলা, যেমন কোনো খুন হলে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে লাশের ছবি তোলা, যাতে ছবি দেখে তদন্ত করতে সুবিধে হয়। সায়েন্টিফিক ফটোগ্রাফাররা আবার রিসার্চ ওয়ার্কের ছবি তুলে। এর বাইরেও রয়েছে ন্যাচার অর্থাত্ প্রকৃতির ছবি তোলা। ল্যান্ডস্কেপ ফটোগ্রাফার, তাদের কাজ শুধু বিভিন্ন স্থানকে দর্শনীয় স্থানের মতো করে ছবি তোলা। সুতরাং যেকোনো ফটোগ্রাফিই পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া যায়।
আয়:
ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফারদের তেমন কোনো ফিক্সড বেতন হয় না। ৩০-৩৫০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় হতে পারে। আর ব্যক্তিগতভাবে যদি ফটো বিক্রি করে, তা হলে তো সে রোজগারের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই।
প্রাথমিক অবস্থায় স্টুডিও ব্যবসায় নামার পূর্বে আপনার ফটোগ্রাফির উপর বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা সম্ভব না হলে বাজারে প্রচলিত ফটোগ্রাফির উপর লেখা মানসম্পন্ন বই ক্রয়ের মাধ্যমে নিজের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃত করতে পারেন। সেই সাথে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ বিশেষ করে এডোব ফটোশপ, ইলাস্ট্রেটর, লাইটরুমসহ বিভিন্ন ফটো এডিটিং সফটওয়্যার সম্বন্ধে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। সেই সাথে একটি ভালো মানের ক্যামেরা কিনতে হবে আপনাকে। স্টুডিওর কাজে ক্যামেরা ক্রয় করার পূর্বে কয়েকটি বিষয় ভালো করে দেখে নিতে হয়। কেননা একটি মানসম্পন্ন ক্যামেরা আপনার স্টুডিওর প্রাণ এবং এর ফলে স্টুডিওর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা সম্ভব।
রেজ্যুলেশন:
রেজ্যুলেশন যত বেশি হবে আপনার ছবি তোলার মান তত উন্নত হবে। একটি ভালো রেজ্যুলেশনের ক্যামেরা আপনাকে ছবি তুলার ক্ষেত্রে বাড়তি স্বাধীনতা দেবে। যার ফলে আপনি স্পষ্ট এবং বড় সাইজের ছবি তুলতে এবং প্রিন্ট করতে পারবেন। কেননা, এটি ২ মেগাপিক্সেল ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে আপনি ৫ বাই ৭ ইঞ্চি ছবি প্রিন্ট দিতে পারবেন কিন্তু ৩ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা দিয়ে খুব সহজেই ৮ বাই ১০ ইঞ্চি প্রিন্ট দিতে পারবেন যা ৪ মেগাপিক্সেলের ক্ষেত্রে ১১ বাই ১৭ ইঞ্চি পর্যন্ত হবে।
জুম লেন্স:
কমদামি ক্যামেরায় প্রায়শই অপটিক্যাল জুম লেন্স থাকে না। তাই বাড়তি রেজ্যুলুশনের সাথে বাড়তি জুমের একটি ক্যামেরা কিনতে হলে আপনাকে কিছুটা বাড়তি টাকা গোনার দুঃখ সয়ে নিতে হবে। আজকাল বাজারে ১০ এক্স ক্ষমতার জুম লেন্সও পাওয়া যাচ্ছে। তবে স্পোর্টস ফটোগ্রাফি ছাড়া এ ধরণের ক্যামেরা সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তেমন একটা প্রয়োজন হয় না। আর জুম লেন্স কিনবার ক্ষেত্রে ট্রাইপডের বিষয়টিও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। কেননা টেলিফটো লেন্থ বা দূরত্বটা যদি বেশি হয় তাহলে হাত কেঁপে যাওয়ার কারণে লেন্স কিনবার ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপনের ধোঁকায় পড়বেন না। অনেক কোম্পানিই অপটিক্যাল জুম (যেখানে সাবজেক্ট জুম করার জন্য লেন্সটিই মুভ করে) এর সাথে ডিজিটাল জুমের বিষয়টি একসাথে মিলিয়ে ফেলে। ফলে ছবির কম পিক্সেলের অংশগুলোই শুধু বিবর্ধিত বা ম্যাগনিফাই হয়। অন্যদিকে অপটিক্যাল জুম একই সাথে ভালো রেজ্যুলুশনের ছবি উপহার দেয় এবং ছবির বিষয়কেও যথেষ্ট বিবর্ধিত করে ম্যানুয়াল ফোকাস: অনেক সময় ক্লোজ-শট নেবার জন্য বা ফোকাস লক হয়ে গেলে ম্যানুয়াল ফোকাসিংয়ের দরকার হয়ে পড়ে। লো-এন্ড ডিজিটাল ক্যামেরার ক্ষেত্রে প্রায়শই এ অপশনটি বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু ডিজিটাল ফোকাসিংয়ে শুধুমাত্র আগে থেকেই নির্ধারিত কিছু দূরত্বে ফোকাসিং করা যায়।
স্টোরেজ:
সর্বোচ্চ রেজ্যুলুশনের ছবির ক্ষেত্রে একটি ২ মেগাপিক্সেল ক্যামেরায় (৮ মে. বা. মেমোরি) ৮ থেকে ১০টি ছবি সংরক্ষণ করা যায়। যদিও ডিজিটাল ক্যামেরার সাথে কত মেগাবাইটের স্টোরেজ থাকে এটা প্রায়শই তেমন গুরুত্ব বহন করে না। কারণ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইউজারকে আলাদা মেমোরি কার্ড কিনতে হয়। এটি এড়াবার জন্য অনেকেই ছবি তোলার সাথে সাথে তা কম্পিউটার বা অন্য কোনো স্টোরেজ ডিভাইসে ট্রান্সফার করে ফেলেন। যদিও এটি প্রায়শই এক ধরনের বাড়তি ঝামেলা সৃষ্টি করতে পারে। বাজারে বর্তমানে যেসব স্টোরেজ মিডিয়া পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছে কমপ্যাক্ট ফ্ল্যাশ, সিকিউর ডিজিটাল কার্ডস এবং স্মার্ট মিডিয়া কার্ডস। এ ছাড়া সনির মতো কিছু কোম্পানি ফ্লপি বা সিডিকে স্টোরেজ হিসেবে ব্যবহার করে। তবে এগুলোর ধারণ ক্ষমতা সাধারণত খুব বেশি হয় না । অন্যদিকে কমপ্যাক্ট ডিস্কে অনেক ছবি স্টোর করা গেলেও এটি ব্যবহারের ফলে ক্যামেরা পারফর্মেন্স লো হয়ে যেতে পারে।
ব্যাটারি:
ডিজিটাল ক্যামেরায় কয়েক ধরনের ব্যাটারি ব্যবহূত হয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে এএ ব্যাটারি, নন-রিচার্জেবল অ্যালকালাইন ব্যাটারি, রিচার্জেবল নিকেল মেটাল হাইড্রাইড ব্যাটারি, হাই ক্যাপাসিটি ডিসপোজেবল সিআরভিথ্রি ব্যাটারি প্রভৃতি। আপনি কোন ধরনের ব্যাটারি ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করবে আপনার কাজের ধরন এবং একটানা কতক্ষণ কাজ করবেন অর্থাত্ আপনি কত সময়ের জন্য ব্যাটারি ব্যাকআপ চান তার ওপর। এ ছাড়াও স্বল্প পরিসরে ডিজিটাল ফটোস্টুডিও তৈরি করতে মাত্র ৬০,০০০ থেকে ১,৫০০০০ টাকা
বিনিয়োগ করে পর্যাপ্ত জ্ঞান নিয়ে যে কেউ ডিজিটাল স্টুডিওর মালিক হতে পারে।
ফটোগ্রাফি কে নিয়ে ক্যারিয়ার করে ভালো টাকা আয় করা যাবে।।।।
সংগৃহিত
|
Tuesday, February 6, 2018
ফটোগ্রাফি নিয়ে ক্যারিয়ার - ফটোগ্রাফি করে ভালো টাকা ইনকাম

Share this with short URL Get Short URL
Related Posts
জেনে নেয় ক্যামেরার ISO কি। অামরা জানি সচরাচর ISO হচ্ছে International Organization for Standardization। কিন্তু ক্
ক্যামেরা কেনার কথা ভাবছেন - Dslr ক্যামেরা কিনবেন। তার আগে এই পোস্ট টা দেখে নিন। ভার্চুয়াল জগতে প্রকাশিত হবার মাধ্যম ছাড়াও আরও নানা কারণে ইদানীং ফটোগ্রাফির প্রতি মানুষে
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Sosial Media
Paling Dibaca
-
সাবিলা নূর ২৭ শে মে ১৯৯৫ সাবিলা নূর একজন বাংলাদেশি মডেল & টেলিভিশন অভিনেত্রী। মডেলিং এর মাধ্যমে তার মিডিয়ায় আগমন ঘটে। ...
-
বার কোড কি??? বার কোড হল কোনো লেখাকে কোডে রুপান্তর করা আমার চিপস,সাবান ও বিভিন্ন ধরনের পণ্যের পেছনে এসব কোড দেখতে পাই যা আমরা বুঝব না ...
Kategori
Timeline
- July 2018 (2)
- June 2018 (1)
- April 2018 (3)
- March 2018 (2)
- February 2018 (39)
Formulir Kontak
Category
Recent Posts
Like on Facebook
Followers
আমাদের কথা
আমার দেশ আমার গর্ব। আমার ভাষা আমার অহংকার । বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ টেকনোলজি বিষয়ে আরো জানুক নিজের বাংলা ভাষায় এবং তাদের জানার পিপাসা আরো বাড়ুক। এই উদ্দেশ্যেই আমরা কাজ করে আসছি।
দেশের মানুষ যাতে নতুন কিছু শিখতে পারে
এই চিন্তাধারা নিয়ে আমাদের পথ চলা।
দেশের মানুষ যাতে নতুন কিছু শিখতে পারে
এই চিন্তাধারা নিয়ে আমাদের পথ চলা।
1 comments
thanks
EmoticonEmoticon